দারুণ ছন্দে, মোহনবাগান অনেক এগিয়ে - শ্যাম থাপা | আজকাল - Sports Gallery

Sports Gallery

খেলাধুলার সব খবর, একসাথে হাতের মুঠোয়

দারুণ ছন্দে, মোহনবাগান অনেক এগিয়ে - শ্যাম থাপা | আজকাল

Share This

কাপ আর ঠোঁটের মাঝে এখন যেন মাত্র এক ম্যাচের দূরত্ব। এই পরিস্থিতি থেকে মোহনবাগান চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলে, আমি সেটাকে অঘটন বলব। আইজল এবার আই লিগে দারুণ খেলছে। দুরন্ত ফর্মে রয়েছে। ওদের হোম ম্যাচ। সব মেনে নিলাম। কিন্তু আইজল এফসি আর যা–‌ই হোক ইস্টবেঙ্গল বা বেঙ্গালুরু এফসি নয়। এরকম পরিস্থিতিতে যদি ইস্টবেঙ্গল বা বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে খেলতে হত, তাহলে বলতাম ম্যাচটা ৫০–৫০। এখানে সেরকম বলতে পারব না। সুতারং আমার যুক্তিতে মোহনবাগান এগিয়ে থাকবে।

এমনিতেই মোহনবাগান দারুণ ছন্দে আছে। তার ওপর ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ জেতার পর ওদের ফুটবলাররা মানসিকভাবে অনেকটা এগিয়ে গেছে। ফর্ম ধরে রাখতে পারলে শনিবারই আই লিগ ঘরে তুলে নিতে সমস্যা হওয়া উচিত নয় সঞ্জয়ের দলের। যদিও ফুটবলে হারজিৎ আছে। সেকথা মাথায় রেখেও বলছি, মোহনবাগান শনিবারের ম্যাচে আটকে গেলে আমি কোচ সঞ্জয় নয়, ফুটবলারদের দিকেই আঙুল তুলব। গত এক দেড় মাস ধরে দলটা যে মানসিকতা নিয়ে খেলছে, গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সেটা দেখাতে না পারলে বুঝব আত্মতু্ষ্টির প্রভাব। মানছি আইজল ঘরের মাঠে খেলবে। গ্যালারির সমর্থন ওদের দিকে থাকবে। কিন্তু ব্যাপারটা এমন নয়, যে মোহনবাগান এরকম পরিস্থিতি এবারই প্রথম খেলবে। অতীতে এরকম অনেক কঠিন ম্যাচ খেলতে হয়েছে। মনে করিয়ে দিই মোহনবাগান শেষবার আই িলগ জিতেছিল দুরন্ত ফর্মের বেঙ্গালুরুকে ওদের ঘরের মাঠে হারিয়ে। 
শনিবারের ম্যাচে সব বিভাগেই আইজলের থেকে এগিয়ে মোহনবাগান। তা সে ফরোয়ার্ড হোক বা মাঝমাঠ। নর্ডি, ডাফি, কাৎসুমিরা দারুণ ছন্দে। জেজে এ বছর ক্লাবের জার্সিতে তেমন ভাল করতে পারেনি। ওর কাছে নিজেকে প্রমাণ করার শেষ সুযোগ বলা যেতে পারে। সেভাবে বল আসছে না বলে গোলের তলায় দেবজিৎকে ভুলে গেলে চলবে না। অনেকেই এএফসি ম্যাচে মাজিয়ার বিরুদ্ধে হারের কথা বলবে। এই হার আইজল ম্যাচে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করি না। বরং প্রভাব ফেললেও সেটা ইতিবাচক হবে। ওই হার বা ভুল থেকে সতর্ক থাকবে কোচ–ফুটবলাররা। আইজলের দলে তেমন কোনও তারকা নেই। তবে মোহনবাগান ডিফেন্সকে সতর্ক থাকতে হবে। মোহনবাগানে তারকা থাকলেও ফুটবল দলগত খেলা। একটু সুযোগ পেলে আইজল ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। 
অন্যভাবে দেখলে ঘরের মাঠে এরকম ইতিহাস গড়ার হাতছানি উল্টে আইজলকেই চাপে রাখবে। এরকম চাপ সামলানোর অভিজ্ঞতা কিন্তু ওদের ফুটবলারদের নেই। কলকাতায় যেমন ঘরের দল গোল করে এগিেয় গেলে সমর্থকদের চিল চিৎকারে বিপক্ষ দলের ওপর চাপ বাড়ে। এই পরিস্থিতি সামলানোর অভিজ্ঞতা মোহনবাগানের আছে। কিন্তু আইজল এগিয়ে গেলে ওদের সমর্থকদের চিৎকার বুমেরাং হয়ে যাবে না তো? বাগান ফুটবলারদের শুধু একটা কথাই মাথায় রাখা উচিত, এরকম সুযোগ বারবার আসবে না। মাঠে নেমে ফুটবলারদের দুশো শতাংশ দিতে হবে। দলে যত বড় মাপের বা নামের ফুটবলার থাকুক না কেন, জিততে না পারলে অবস্থা কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের মতোই হবে।
কোচ সঞ্জয় এখন যথেষ্ট অভিজ্ঞ। গত তিন মরশুমে আই লিগে ধারাবাহিকভাবে দলের সাফল্যই সেকথা বলে দিচ্ছে। ইতিমধ্যে আগামী মরশুমের জন্যও ওকে দায়িত্বে রেখে দিয়েছে ক্লাব। ফলে নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। তবে গতবার কাছে এসেও ট্রফি হাতছাড়া হওয়ায় আক্ষেপটা নিশ্চয়ই সঞ্জয়ের মধ্যে কাজ করবে। একই ভুলের পুনরাবৃত্তি ও চাইবে না। এবার এই পরিস্থিতি থেকে ট্রফি ঘরে তুলতে না পারলে কাজটা কঠিন। আইজলের হারানোর কিছু নেই। ওরা মরিয়া হয়ে ঝঁাপাবে। তেমনই মোহনবাগানের সামনেও জেতা ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। ইস্টবেঙ্গল ট্রফির দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ায় মোহনবাগানই এখন বাংলার প্রতিনিধি। এবছর বাংলায় সন্তোষ ট্রফি এসেছে। মোহনবাগানের হাত ধরে আই িলগ এলে বাংলার ফুটবল আরও উজ্জীবিত হবে।

No comments:

Post a Comment

Pages