তিনি এক মোহনবাগানি । আজকাল - Sports Gallery

Sports Gallery

খেলাধুলার সব খবর, একসাথে হাতের মুঠোয়

তিনি এক মোহনবাগানি । আজকাল

Share This

বাড়িটার শিরা–উপশিরায় বইত দুটো রঙ!‌ সবুজ আর মেরুন। বাবা–কাকা, পিসে–পিসি সব্বাই পরিচয় দিতে গেলে, ‘‌মোহনবাগানি’‌, এই পদবিটাকেই শ্রেষ্ঠ পাওয়া মনে করতেন। এহেন বাড়ির ছেলে হয়ে বাগান সমর্থক হবে না, তা কী করে হয়?‌ হয়নি। ক্লাস ফোরে যখন, তখন থেকেই পাক্কা মোহনবাগান সমর্থক সুরজিৎ নন্দী।
সেই একরত্তি ছেলে এখন মধ্যম বয়সে। মাথার চুল পাতলা হয়েছে। মোটা গোঁফ। চাকরির জন্য নিজের শহর ছেড়ে পাড়ি দিতে হয়েছে অন্য শহরে। কিন্তু বদলে যাওয়া সময় আর বদলে যাওয়া চারপাশে, তাঁর মোহনবাগাম–প্রেম এখনও অক্ষত। তিন দশক ধরে তিনি বাগান সমর্থক। শুরুর দিকে ডার্বি আর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থাকলে, তাঁকে রুখে রাখা যেত না বাড়িতে। কিন্তু এখন প্রায় সব ম্যাচে মাঠে হাজির থাকাটা অভ্যেসে পরিণত করেছেন। এই যেমন ডার্বি দেখতে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ি। সেখান থেকে শিলং ছুটেছিলেন। তারপর লুধিয়ানায়। সমর্থনের নেশায় বুঁদ এমনই যে ছুটে গিয়েছিলেন মালে, কলম্বোও!‌ কাজকর্ম ফেলে এভাবে ছুটে বেড়াতে সমস্যা হয় না?‌ সুরজিৎ নন্দীর কথায়, ‘‌যখন ক্লাস ফোরে পড়তাম, সেই থেকে মোহনবাগান আমার হৃদয়ে। মোহনবাগান আমার জীবনের অঙ্গ। কলকাতায় থাকতে ঘরের মাঠে সব খেলা দেখতাম। কিন্তু চেন্নাইয়ে কাজের জন্য বদলি হওয়ার পর সমস্যা হচ্ছিল। তখন বেছে বেছে খেলা দেখতে যেতাম। কিন্তু এখন প্রায় সব ম্যাচে মাঠে হাজির থাকি। দারুণ লাগে।’‌ আগে বিদেশি ফুটবল দেখার সুযোগ ছিল না তেমন। কিন্তু এখনকার ছোটরা সে সুযোগটা পায়। ফলে দেশীয় ফুটবলে তাদের আগ্রহ কমছে। ব্যাপারটা কি তাঁকে ভাবায়?‌ সুরজিৎ নন্দীর মতে, ‘‌হ্যাঁ, বিদেশি ফুটবল ছোটবেলায় আমরা তেমন দেখতে পেতাম না। সে সময় ইউরোপীয় লিগের খেলা সম্প্রচারিত হত না। কিন্তু এখন ছবিটা বদলেছে। তবে খারাপ লাগে এটা দেখে যে, বিদেশি ফুটবল দেখতে গিয়ে, এখনকার প্রজন্ম দেশীয় ফুটবলে আগ্রহ হারাচ্ছে!‌ নিজের দেশের ফুটবল সম্পর্কে কেউ খোঁজ রাখে না!‌’‌ কিন্তু এখন যে ফ্যান–ক্লাবের রমরমা?‌ সুরজিৎবাবুর কথায়, ‘‌হ্যাঁ, মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, বেঙ্গালুরুর ফ্যান ক্লাব এখন তৈরি হয়েছে। আগে অ্যাওয়ে ম্যাচে আমি গ্যালারিতে হয়ত একা বসে থাকতাম। কিন্তু এখন দেখি সবুজ–মেরুন ফ্যান ক্লাবের সমর্থকরা হাজির থাকে। বেশ লাগে ব্যাপারটা।’‌ এবার কি মোহনবাগানই আই লিগ জিতবে?‌ সময় নষ্ট না করেই সুরজিৎবাবু বলে ওঠেন, ‘‌এই মরশুমে দল যেভাবে খেলছে খুব খুশি। আমরাই এখন ১ নম্বরে। আইজল আর ইস্টবেঙ্গল লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মন বলছে ট্রফি আমাদের ঘরেই আসবে।’‌ আই লিগ আর আইএসএল মিলিয়ে দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। আপনার কী মত?‌ সুরজিৎ নন্দী জানান, ‘‌ভারতীয় ফুটবলের স্বার্থে সেটাই হয়ত দরকার। প্লেয়ারদের পক্ষেও হয়ত সেটা ভাল হবে। তবে আমি চাই, টপ ডিভিশনে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল আর বেঙ্গালুরু থাকুক। কারণ, এই তিন দল ছাড়া দেশীয় ফুটবলের টপ ডিভিশন কল্পনা করা যায় না।’‌  ‌‌‌‌

No comments:

Post a Comment

Pages